কেন বিশেষজ্ঞরা রাতে বালিশের নীচে এক কোয়া রসুন রেখে ঘুমোতে বলেন? কারণটা জানলে আপনিও আজ থেকে রাখবেন
রসিয়ে-কষিয়ে রান্নায় রসুনের জুড়ি মেলা ভার। তবে সেখানেই থেমে থাকে না তার মাহাত্ম্য। রসনার পাশাপাশি শরীরের নানা উপকারে বিশেষ কার্যকরী রসুন। খেয়ে তো বটেই, এমনকী বালিশের তলাতেও যদি এক কোয়া রসুন রেখে শুতে যান, তবে ফল পাবেন একেবারে হাতেনাতে। হার্টের সমস্যা, যকৃতের সমস্যা, ঠাণ্ডা লাগা, ধমনী পরিষ্কার রাখা ও রক্ত বিশুদ্ধ করায় আপনার কাছের বন্ধু কাঁচা রসুন। খবর-এই সময়
গবেষকদের মতে, রসুন প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। রোজ সকালে খালি পেটে যদি এক কোয়া কাঁচা রসুন খাওয়া যায়, তবে তা শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে, লিভার, পিত্তথলি ও পাকস্থলীকে সুস্থ সবল রাখতে এবং হজমশক্তি বাড়াতে রসুনের ভূমিকা অনস্বীকার্য। ডায়াবিটিস, হতাশা ও বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধেও রসুনের জুড়ি মেলা ভার।
শুধু খেয়েই নয়, রসুনের সংস্পর্শে থাকলেই সে তার কাজ করে চলবে। অনেকেই বলেন, বালিশের নীচে এক কোয়া কাঁচা রসুন রেখে শুলে তার গুণ অপরিসীম। এতে আপনার ঘুম গভীর হবে। দূরে পালাবে হতাশা। পিছু হঠবে নেতিবাচক মানসিকতা। মনের মধ্যে আসবে আশ্চর্য উত্ফুল্লতা। তাই শরীর ও মন সুস্থ রাখতে সঙ্গী করতে পারেন রসুনকে। তারপরই দেখুন ম্যাজিক।
স্ট্রোক কেন হয় জানেন? জেনে নিন স্ট্রোক প্রতিরোধের উপায়
আপনি কি ধূমপান করেন? ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় আছে? অবসাদে ভুগছেন? তা হলে সাবধান থাকুন। কারণ, বিশেষজ্ঞদের মতে এগুলি স্ট্রোক বা ব্রেন স্ট্রোকের আশঙ্কা অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়।
বছর দেড়েক আছে দিল্লিতে আয়োজিত তিন দিনের এক সম্মেলনে আন্তর্জাতিক স্নায়ু বিশেষজ্ঞরা জানান, ভারতে ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়া রোগীর মধ্যে ২০ শতাংশের বয়স ৪০ বছরের নীচে। এ দেশে বাড়তে থাকা ধূমপানের অভ্যাস, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাইপার টেনশনের মতো সমস্যাকেই দায়ী করেছেন চিকিত্সকরা। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বের প্রায় ২ কোটি মানুষ প্রতি বছর ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। সংখ্যাটা সত্যিই চমকে ওঠার মতো।
স্ট্রোক কী:
সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকার জন্যে আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষে, এমনকি মস্তিষ্কের কোষেও অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত সঞ্চালন প্রয়োজন। কোনও কারণে মস্তিষ্কের রক্তবাহী ধমনীর পথ সংকীর্ণ হয়ে বা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে রক্ত চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেলে মস্তিষ্কের কোষ অক্সিজেনের অভাবে নিস্তেজ হয়ে যায়। এটাকেই চিকিত্সকেরা স্ট্রোক বলেন।
স্ট্রোক হওয়ার কারণ:
• যাদের রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি তাদেরও স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেশি।
• মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বন্ধ হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ উচ্চ রক্তচাপ। বিশেষ করে অনিয়ন্ত্রিত ব্লাড প্রেশার থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।
• স্ট্রেস ও ডিপ্রেশন সহ অন্যান্য মানসিক সমস্যা থাকলেও এই সমস্যার সম্ভাবনা থাকে।
• যারা দিনভর বসে কাজ করেন, হাঁটা চলা সহ কায়িক শ্রম নেই বললেই চলে তাঁদের এই রোগের ঝুঁকি অন্যদের থেকে বেশি।
• পুষ্টিকর খাবারের পরিবর্তে ভাজাভুজি, ফাস্ট ফুড বেশি খেলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।
• ধূমপানের ফলে অন্যান্য অনেক অসুখের সঙ্গে সঙ্গে স্ট্রোকের ঝুকিও অনেকটাই বেড়ে যায়।
• নিয়মিত অতিরিক্ত মদ্যপানের অভ্যাস স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
• যাঁরা ডায়াবেটিসে ভুগছেন এবং তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডায়েট বা এক্সারসাইজ করেন না, তাঁদেরও স্ট্রোকের সম্ভাবনা অনেক বেশি।
• হার্টের অসুখ থাকলে ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি।
স্ট্রোকের ঝুঁকি এড়াতে যা যা করনীয়:
• ওজন কমাতে সুষম খাবারের উপরেই ভরসা রাখুন। ডায়েটে রাখুন পর্যাপ্ত পরিমাণে সবজি ও ফল।
• সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন আধ-ঘণ্টা করে দ্রুত পা চালিয়ে হাঁটতে হবে।
• ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে।
• প্রতিদিন অন্তত ৫-৬ ঘণ্টা ঘুমোতে হবে।
• ব্লাড প্রেশার আর সুগার থাকলে তা তো নিয়ম মেনে নিয়ন্ত্রণে রেখে চলতে হবে।
• ভুঁড়ি বাড়তে দেওয়া চলবে না।
• শরীরচর্চার সময় খেয়াল রাখতে হবে তা যেন অত্যাধিক পরিশ্রমসাধ্য বা ক্লান্তিকর না হয়ে ওঠে।
• যদি আচমকা হাত, পা বা শরীরের কোনও একটা দিক অবশ, অসাড় লাগে বা চোখে দেখতে বা কথা বলতে অসুবিধে হয় অথবা ঢোক গিলতে কষ্ট হয়, সেক্ষেত্রে কোনও ঝুঁকি না নিয়ে দ্রুত চিকিত্সকের শরণাপন্ন হন।